ঢাকা, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

২৯ আশ্বিন ১৪৩২

প্রকাশ: ১৮:৩৫, ৩০ আগস্ট ২০২৫ | আপডেট: ১৮:৩৫, ৩০ আগস্ট ২০২৫

সূন্নী মতাদর্শী ৩টি রাজনৈতিক দলের ‘বৃহত্তর সুন্নী জোট’র আত্মপ্রকাশ

প্রকাশ: ১৮:৩৫, ৩০ আগস্ট ২০২৫ | আপডেট: ১৮:৩৫, ৩০ আগস্ট ২০২৫

সূন্নী মতাদর্শী ৩টি রাজনৈতিক দলের ‘বৃহত্তর সুন্নী জোট’র আত্মপ্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: সূন্নী মতাদর্শী ৩টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি)—এর সমন্বয়ে ‘বৃহত্তর সুন্নী জোট’ এর ঘোষণা করা হয়। শনিবার (৩০ আগস্ট) সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী ২৪ জুলাইয়ের মতো কোনো আন্দোলন-সংগ্রামে এই দেশে এত বেশি রক্তপাত ঘটেনি। সংবাদ সম্মেলনে ২৪ জুলাই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, শহীদদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান, পুনর্বাসন এবং আহতদের উন্নত চিকিৎসার দাবি জানানো হয়। লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ৫ আগস্ট পরবর্তী সরকার জনপ্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। বিগত ১ বছরে মব ভায়োলেন্স, সন্ত্রাস, খুন, গুমসহ অসংখ্য বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড অতীতের মতো অব্যাহত রয়েছে। চাঁদাবাজি, আধিপত্য বিস্তার, দখল- বেদখল নিয়ে জনজীবন সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে। এছাড়া, শতাধিক মসজিদ, মাদরাসা ও মাজারসহ বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা, ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের মতো নেতিবাচক ঘটনা ঘটেছে। সরকারের নির্লিপ্ত ও নির্বিকার ভূমিকা জনমনে ক্রমাগত ক্ষোভ সৃষ্টি করছে। জাতীয় জীবনে প্রতিহিংসার রাজনীতি জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসেছে। নির্বাচনের সময় ঘোষিত হলেও, এখনো তাতে কোনো স্পষ্টতা আসেনি। বিগত এক বছরেও সংস্কার দৃশ্যমান হয়নি। সরকারের সংশ্লিষ্ট অনেকের দুর্নীতিতে জড়িত হওয়ার ঘটনা ২৪ জুলাইয়ের আন্দোলনের চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক বলে মন্তব্য করা হয়। প্রস্তাবিত পিআর পদ্ধতি জনগণের মধ্যে সংশয় এবং বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। এছাড়া, জাতীয় নীতি নির্ধারণে সকল নিবন্ধিত দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ প্রবর্তনেরও দাবি জানানো হয়। অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ১- জুলাই আন্দোলনে বিভিন্ন থানা থেকে লুট হওয়া এবং সকল অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে কম্বিং অপারেশন পরিচালনা করা। ২- অবৈধ অর্থ পাচার রোধ এবং পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ গ্রহণ করা। ৩- নির্বাচনের পূর্বে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা। ৪- দুর্নীতিবাজ, আদালতের রায়ে দণ্ডিত সন্ত্রাসী, ঋণখেলাফি, বিদেশে অর্থ পাচারকারী ও কালো টাকার মালিকদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা। এছাড়া, ধর্মীয় মূল্যবোধ ও স্বাধীনতার চেতনার ভিত্তিতে ন্যায়ভিত্তিক, কল্যাণ-মুখী এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়। শান্তিপূর্ণ ও অহিংস রাজনৈতিক সংস্কৃতির চর্চা এবং দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। দাবি গুলির মধ্যে আরও রয়েছে- ১- সুদমুক্ত, ন্যায্য ও উৎপাদনভিত্তিক অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করা। ২- কৃষি, শিল্প এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা খাতকে রাষ্ট্রীয় সহায়তা দিয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। ৩- মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং বাজারদর স্থিতিশীল করতে সিন্ডিকেট ও কালোবাজারি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া। ৪- জাতীয় সম্পদ, বিশেষ করে গ্যাসসহ খনিজ সম্পদের যথাযথ ব্যবহার ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা। ৫- বৈদেশিক কর্মসংস্থানের নতুন বাজার সৃষ্টি এবং প্রবাসীদের স্বার্থ সংরক্ষণ করা। ৬- কুরআন-সুন্নাহর আলোকে যুগোপযোগী জাতীয় শিক্ষা নীতি প্রণয়ন এবং মাদরাসা, সাধারণ ও কারিগরি শিক্ষার মধ্যে সমন্বয় সাধন করা। ৭- মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মসংস্থানের পদক্ষেপ গ্রহণ, নারী ও শিশু অধিকার সুরক্ষা এবং মাদক, জুয়া ও অনৈতিক সংস্কৃতি নির্মূলের দাবিও জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে ১৭ দফা দাবি এবং ২১ দফা ঘোষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন—শায়খুল হাদিস অধ্যক্ষ আল্লামা জয়নুল আবেদীন জুবাইর। ঘোষণাপত্র পাঠ করেন—অধ্যক্ষ আল্লামা স. উ. ম. আবদুস সামাদ। যৌথভাবে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন—আল্লামা এম. এ. মতিন, পীরে তরিকত আল্লামা ছৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী এবং পীরে তরিকত আল্লামা ছৈয়দ সাইফুদ্দীন আল হাসানী। সঞ্চালনা করেন—মোহাম্মদ আসলাম হোসাইন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- আল্লামা এম. এ. মতিন, আল্লামা ছৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী, আল্লামা ছৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী, অধ্যক্ষ আল্লামা এস. এম. ফরিদ উদ্দীন, আল্লামা আবু সুফিয়ান আবেদী আলকাদেরী, এডভোকেট আবু নাছের তালুকদার, এম. সোলায়মান ফরিদ, অধ্যক্ষ এম. ইব্রাহীম আখতারী, আল্লামা খাজা আরিফুর রহমান তাহেরী, আল্লামা মোশাররফ হোসেন হেলালী, মাওলানা আশেকুর রহমান হাশেমী, মাওলানা বাকি বিল্লাহ আজহারী, মাওলানা রুহুল আমিন ভূঁইয়া চাঁদপুরী, স. ম. হামেদ হোসাইন, এইচ. এ. এম. মুজিবুল হক শাকুর, ঢালি কামরুজ্জামান হারুন, মোহাম্মদ আবদুর রহিম, অধ্যক্ষ আলী মোহাম্মদ চৌধুরী, মোহাম্মদ সোহেল সামাদ বাচ্চু, এ. এম. মঈনউদ্দীন চৌধুরী হালিম, মাওলানা ওয়াহেদ মুরাদ, মাসুম বিল্লাহ মিয়াজি, এড. ইসলাম উদ্দীন দুলাল, তরিকুল হাসান লিংকন, এড. ইকবাল হাসান, মোহাম্মদ ইব্রাহীম মিয়া, আবদুল হাকিম, এস. এম. তারেক হোসাইন, কাজী জসিম উদ্দীন আশরাফী প্রমুখ।

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন