ঢাকা, রোববার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫

২৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

রাজনৈতিক দলে বিরোধ প্রসঙ্গে যা বললেন আইন উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০:৪৬, ৩০ অক্টোবর ২০২৫

রাজনৈতিক দলে বিরোধ প্রসঙ্গে যা বললেন আইন উপদেষ্টা

আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। ছবি: সংগৃহীত

জুলাই সনদ, গণভোটসহ বিভিন্ন ইস্যুতে গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিরোধ তুঙ্গে। এমন পরিস্থিতিতে সরকার কী করবে তা নিয়ে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘এতদিন আলোচনার পর যদি আপনাদের ঐকমত্য না আসে, এখন আমরা আসলে কীভাবে কী করব, এটা নিয়ে সত্যি আমাদের একটু চিন্তা করতে হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক নিয়ে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় এবং গণভোটের সময় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর বিরোধ তীব্রতম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পক্ষ শক্তিগুলোর মধ্যে এই বিরোধ হতাশাব্যাঞ্জক।

গণভোট নিয়ে বিএনপি-জামায়াতসহ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিরোধ নিয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা দুর্ভাগ্যজনক। ২৭০ দিন যাবত আলাপ-আলোচনার পর প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্যের মধ্যে যে অনৈক্যের সুর দেখছি এটা হতাশাব্যঞ্জক। এই তীব্র বিরোধের মধ্যে কীভাবে সমঝোতার দলিল পাস; এটা খুব দুরূহ একটা চ্যালেঞ্জ আমাদের সামনে এনে দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ওনাদের তো আসলে ঐকমত্য হয়নি। কিছু ভাইটাল (গুরুত্বপূর্ণ) প্রশ্নে এর আগে আমরা জেনেছিলাম কন্টেন্ট নিয়ে বিরোধ ছিল, যে সংস্কার হবে সেই বিষয়বস্তু নিয়ে বিরোধ ছিল। এখন আবার দেখলাম আরও দুই ধরনের বিরোধ তৈরি হয়েছে; একটা হচ্ছে এটা (জুলাই সনদ) কী পদ্ধতিতে পাস করা হবে, আরেকটা হচ্ছে এই জন্য গণভোট হলে সেটা কবে হবে।’

দলগুলোর বিরোধ নিয়ে তিনি বলেন, ‘এত দৃঢ় এবং পরস্পরবিরোধী। কী বলব? যে উত্তেজিত ভূমিকা নিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো, যারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে ছিল, আপনারা যদি এরকম একটা ভূমিকা নেন তাহলে সরকার কী করবে? আমরা ঠিক বুঝতে পারছি না।’

বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ নিয়ে সাধারণ আলোচনা হয়েছে বলেও জানান উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

তিনি বলেন, ‘অনৈক্যের বিষয় একটা হচ্ছে- আপনারা জানেন ঐকমত্য কমিশন দুইটা বিকল্প দিয়েছে। একটা হচ্ছে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ তারপর গণভোট; তারপরে ২৭০ দিনের মধ্যে না হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধান সংশোধন হয়ে যাবে। তো এরকম কোনো নজির আছে কি না বা এটা আদৌ সম্ভব কি না এটা আমরা দেখবো। আরেকটা হচ্ছে, এই দায়-দায়িত্ব নির্বাচিত সংসদের হাতে ছেড়ে দেওয়া। এই দুইটা বিকল্পের মধ্যে কোনটা আসলে বেশি গ্রহণযোগ্য সেটা নিয়ে রাজনৈতিক দলের মধ্যে তীব্র মতবিরোধ রয়েছে। আর গণভোট কবে হবে ওটা নিয়ে তো বিরোধ তীব্রতম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে বোধ হয়।’

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি এবং গণভোটের সময় নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা সিদ্ধান্ত নেবেন জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, ‘এসব ব্যাপারে একটা সময় আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা। প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে আমরা থাকব। আমরা ওনাকে সহায়তা করার জন্য থাকব। সিদ্ধান্ত, এটা কোনো পার্টিকুলার কেউ নেবে না। এটা আপনারা নিশ্চিত থাকেন। এই সিদ্ধান্ত প্রধান উপদেষ্টা নেবেন। আমাদের সঙ্গে পরামর্শ করার প্রয়োজন হলে উনি পরামর্শ করবেন এবং আমরা যে সিদ্ধান্ত নেব সেখানে আমরা দৃঢ় থাকব। সিদ্ধান্ত খুব দ্রুত হবে।’