ঢাকা, রোববার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫

২৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

দক্ষিণ কোরিয়ায় বৈঠকে কানাডা ও চীনের সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে ইতিবাচক অগ্রগতি

আন্তর্জাতিক প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩:২৯, ১ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ০৩:৩৩, ১ নভেম্বর ২০২৫

দক্ষিণ কোরিয়ায় বৈঠকে কানাডা ও চীনের সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে ইতিবাচক অগ্রগতি

কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি। ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘদিনের টানাপোড়েন শেষে সম্পর্ক মেরামতের পথে এগোচ্ছে চীন ও কানাডা। দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত এশিয়া-প্যাসিফিক অর্থনৈতিক সম্মেলনের (APEC Summit) ফাঁকে দুই দেশের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে এই ইতিবাচক ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কারনি সাক্ষাৎ করেন। উভয় দেশ জানিয়েছে, তারা বাস্তবভিত্তিক ও গঠনমূলক উপায়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন।

কানাডার পক্ষ থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এই বৈঠক দুই দেশের সম্পর্কের একটি মোড় ঘোরানোর মুহূর্ত হিসেবে বিবেচিত হবে।’

চীনা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উদ্ধৃত করে শি জিনপিং বলেন, ‘দুই দেশের যৌথ প্রচেষ্টার ফলে সম্পর্কের উন্নতির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। আমরা কানাডার সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী, যাতে সম্পর্ক দ্রুত সুস্থ, স্থিতিশীল ও টেকসই পথে ফিরে আসে।’

কানাডার প্রধানমন্ত্রী কারনি, যিনি গত মার্চে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন, শি জিনপিংয়ের আমন্ত্রণে চীন সফরে যাওয়ার বিষয়টি গ্রহণ করেছেন বলে জানা গেছে, যদিও নির্দিষ্ট কোনো তারিখ ঘোষণা করা হয়নি।

বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কারনি বলেন, ‘আমি বৈঠকের ফলাফলে অত্যন্ত সন্তুষ্ট। এটি আমাদের সম্পর্কের একটি নতুন অধ্যায় খুলে দিচ্ছে—যা কানাডার পরিবার, ব্যবসা ও শ্রমিকদের জন্য সুযোগ তৈরি করবে এবং বিদ্যমান সমস্যাগুলো সমাধানের পথও প্রশস্ত করবে।’

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি সম্পর্কের নতুন সূচনা হলেও এখনই কৌশলগত অংশীদারিত্বে ফেরা সম্ভব নয়। 

কানাডার এশিয়া প্যাসিফিক ফাউন্ডেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ভিনা নাজিবুল্লাহ বলেন, ‘এটি অবশ্যই ইতিবাচক পরিবর্তনের সংকেত, কিন্তু কানাডাকে সতর্ক থাকতে হবে, কারণ চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আচরণে তেমন কোনো পরিবর্তনের প্রমাণ নেই। চীন এখনো কানাডার নিরাপত্তার জন্য একটি চ্যালেঞ্জ, বিশেষ করে আর্কটিক অঞ্চলে তাদের প্রভাব বিস্তারের প্রচেষ্টায়।’

চীন-কানাডা সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয় ২০১৮ সালের শেষ দিকে, যখন কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা মেং ওয়ানঝোকে গ্রেপ্তার করে। এর প্রতিক্রিয়ায় চীন দুই কানাডীয় নাগরিক মাইকেল কোভরিগ ও মাইকেল স্পেভরকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে আটক করে।

২০২১ সালে মেং ওয়ানঝো ও দুই কানাডীয় নাগরিকের মুক্তির পরও দুই দেশের সম্পর্ক তেমন উন্নতি হয়নি। তবে সাম্প্রতিক এই বৈঠককে উভয় দেশই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচনা হিসেবে দেখছে।

এ সম্পর্কিত খবর