ঢাকা, রোববার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫

২৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

দগ্ধ ও নির্যাতনের ক্ষতসহ ফিলিস্তিনিদের দেহ ফেরত পাঠাল ইসরায়েল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭:২২, ১৭ অক্টোবর ২০২৫

দগ্ধ ও নির্যাতনের ক্ষতসহ ফিলিস্তিনিদের দেহ ফেরত পাঠাল ইসরায়েল

ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলের কাছ থেকে ফেরত পাওয়া ফিলিস্তিনি বন্দিদের মৃতদেহে ‘নির্যাতন, দগ্ধ ও হাত-পা বাঁধার স্পষ্ট চিহ্ন’ দেখা গেছে, জানিয়েছে গাজা উপত্যকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ড. মুনির আল–বুরশ বলেন, ‘গাজার বন্দিদের মরদেহ আমাদের কাছে ফেরত এসেছে পশুর মতো বাঁধা অবস্থায়। তাদের চোখ বাঁধা ছিল এবং দগ্ধ ও নির্যাতনের ভয়াবহ চিহ্ন যুক্ত ছিল—যা গোপনে সংঘটিত বর্বরতার প্রমাণ।’ খবরটি জানিয়েছে টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

ড. বুরশ বলেন, ‘এই সব দেহে থাকা ক্ষতচিহ্ন এমন অপরাধের সাক্ষ্য দেয় যা লুকানো সম্ভব নয়। অনেক বন্দিকে বেঁধে রাখার পর সরাসরি হত্যা করা হয়েছে।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘নিরীহ ফিলিস্তিনিদের মরদেহগুলো মৃত্যুর পরও তাদের হত্যাকারীদের নৃশংসতার সাক্ষ্য হয়ে রইল। তারা স্বাভাবিকভাবে মারা যাননি, বরং বেঁধে রাখার পর গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।’

তিনি ঘটনাটিকে ‘পূর্ণমাত্রার যুদ্ধাপরাধ’ আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করা যায়।

এদিকে ফিলিস্তিনি বন্দিবিষয়ক গণমাধ্যম কার্যালয় (Palestinian Prisoners’ Media Office) জানিয়েছে, ফেরত পাওয়া কিছু মরদেহে অঙ্গচুরির প্রমাণও থাকতে পারে।

সংস্থাটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘প্রাথমিক তথ্য বলছে, কিছু মরদেহ থেকে মানব অঙ্গ চুরি করা হয়েছে—যা মানবতার সীমা ছাড়ানো এক অপরাধ এবং দখলদার বাহিনীর জীবিত ও মৃত উভয় ফিলিস্তিনির ওপর চালানো পরিকল্পিত অপরাধেরই ধারাবাহিকতা।’

চিকিৎসক ও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃতি দিয়ে সংস্থাটি আরও জানায়, ‘ফেরত পাওয়া বহু মরদেহ হাতকড়া পরা, চোখ বাঁধা অবস্থায় ছিল; শরীরে ছিল তীব্র নির্যাতন, দগ্ধতা ও সাঁজোয়া যান দিয়ে পিষে ফেলার মতো ক্ষতের চিহ্ন।’

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘প্রমাণগুলো স্পষ্ট করে যে, অনেক বন্দীকে গ্রেপ্তারের পর ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করা হয়েছে—যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও চতুর্থ জেনেভা কনভেনশনের সরাসরি লঙ্ঘন।’

সংস্থাটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানায়, যাতে অপরাধীদের শনাক্ত করে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের আওতায় আনা যায়।

এর আগে বৃহস্পতিবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, তারা আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির মাধ্যমে ইসরায়েলের কাছ থেকে ৩০ ফিলিস্তিনির মরদেহ গ্রহণ করেছে, যাদের অনেকের শরীরে ‘নির্যাতন ও পোড়ার চিহ্ন’ পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির পর থেকে ইসরায়েল মোট ১২০ ফিলিস্তিনির মৃতদেহ ফেরত দিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

এ সম্পর্কিত খবর