ডেইলিদর্পণ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:২৮, ২৭ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ০২:৪৯, ২৭ অক্টোবর ২০২৫
রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনের উজ্জ্বল নক্ষত্র রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা। শুধু একজন জনপ্রিয় কণ্ঠশ্রমিক নন, তিনি একজন সমাজসেবক, লেখক এবং রাজনৈতিকভাবে সচেতন নাগরিকও। সংগীত, সমাজসেবা ও দেশপ্রেম—এই তিনের মেলবন্ধনেই গড়ে উঠেছে তার বহুমাত্রিক জীবন।
১৯৬৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকায় জন্ম নেওয়া কনকচাঁপা ছোটবেলা থেকেই গান শেখা শুরু করেন। ১২ বছর ধরে উস্তাদ বসির আহমেদের কাছে তালিম নেন। ১৯৮৪ সালে পেশাদার সংগীতজীবন শুরু করেন তিনি। আধুনিক গান, লোকগীতি, নজরুল সঙ্গীত ও চলচ্চিত্রের প্লেব্যাক—সব ধারাতেই তিনি সমান দক্ষতা দেখিয়েছেন। এখন পর্যন্ত তিনি তিন হাজারেরও বেশি চলচ্চিত্রের গান গেয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সেরা নারী প্লেব্যাক শিল্পীর স্বীকৃতি পেয়েছেন কনকচাঁপা—‘লাভ স্টোরি’ (১৯৯৫), ‘প্রেমের তাজমহল’ (২০০১) এবং ‘এক টাকার বউ’ (২০০৮) সিনেমার জন্য। সংগীতে দীর্ঘ ৪১ বছরের যাত্রা উদযাপন করেছেন তিনি।
গান ছাড়াও সমাজসেবায় নিজেকে সক্রিয় রেখেছেন এই শিল্পী। নারী উন্নয়ন, শিশু অধিকার ও দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানোসহ বিভিন্ন মানবিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন তিনি নিয়মিত। তার মানবিকতা ও সহানুভূতি তাকে সমাজের নানা স্তরে করে তুলেছে অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব।
রাজনীতির ক্ষেত্রেও কনকচাঁপা সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর মনোনয়নে তিনি ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ-১ আসনে প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তিনি মনে করেন, রাজনীতি জনগণের সেবার একটি মাধ্যম এবং সততা ও দেশপ্রেমের ভিত্তিতেই রাজনীতি হওয়া উচিত।
-20250911003956.webp)
শিল্পী কনকচাঁপা শুধু কণ্ঠশ্রমিক নন, একজন লেখকও। তার লেখা বইয়ের মধ্যে রয়েছে আত্মজীবনীমূলক ‘কাটা ঘুড়ি’ (২০২০), ‘স্থবির যাযাবর’ (২০১১) এবং কবিতার সংকলন ‘মুখোমুখি যোদ্ধা’ (২০১২)। নিয়মিত পত্রপত্রিকায়ও তিনি কলাম লেখেন।
ব্যক্তিগত জীবনে কনকচাঁপা ১৯৮৪ সালে সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক মইনুল ইসলাম খানকে বিয়ে করেন। তাদের এক ছেলে ফয়জুল ইসলাম খান ও এক মেয়ে ফারিয়া ইসলাম খান রয়েছে। দম্পতির নাতি-নাতনির সংখ্যা পাঁচজন।
সংগীত, সমাজসেবা, সাহিত্য ও রাজনীতিতে সমানভাবে সক্রিয় রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা প্রমাণ করেছেন—একজন শিল্পী শুধু সুরে নয়, চিন্তায়, কর্মে ও মানবিকতায়ও সমাজ পরিবর্তনের অগ্রদূত হতে পারেন।